নীলিমা ইব্রাহিম কৃত আমি বীরাঙ্গনা বলছি | নির্দেশনা: সৈয়দ জামিল আহমেদ | স্পর্ধা প্রযোজনা
নীলিমা ইব্রাহিম কৃত আমি বীরাঙ্গনা বলছি (Nilima Ibrahim’s A WAR HEROINE, I SPEAK); পরিকল্পনা ও নির্দেশনা: সৈয়দ জামিল আহমেদ (Designed and directed by Syed Jamil Ahmed); স্পর্ধা প্রযোজনা ব্রুশিয়ার।
স্পর্ধা: ইন্ডিপেন্ডেন্ট থিয়েটার কালেক্টিভ
১৯৭২ সালের মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে 'গ্রুপ থিয়েটার' সাংগঠনিক-কাঠামোভিত্তিক যে নাট্যচর্চার সূচনা হয়েছিলো, তার রয়েছে একটি গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। কিন্তু একবিংশ শতকের বিশ্বায়নের যুগে ও নিও-লিবারাল অর্থনৈতিক ব্যবস্থার অধীনে ‘গ্রুপ থিয়েটার' নাট্যচর্চার মূল শক্তি বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণি এখন এমন জীবনযাপনে তাড়িত যে নাট্যচর্চার জন্য প্রয়োজনীয় সময় নিয়োগে অক্ষম। এ অবস্থা অতিক্রমের ক্ষুদ্র প্রয়াস হিসেবে ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালে, সৈয়দ জামিল আহমেদ এর নেতৃত্বে ‘স্পর্ধা: ইন্ডিপেন্ডেন্ট থিয়েটার কালেক্টিভ' নামে একটি অলাভজনক ও পেশাদার নাট্যদল গঠিত হয়।
নাট্যসংগঠনটির কেন্দ্রে রয়েছে একটি ক্ষুদ্র ‘বীজ দল' (Core Group)। এর সদস্য গুটিকয়েক স্থায়ী নাট্যকর্মী যারা সামাজিক ও আদর্শগত চেতনার প্রতি দায়বদ্ধ এবং নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে শৈল্পিক ও পেশাদারিত্বের মান বজায় রাখতে সক্ষম। একটি নতুন প্রযোজনার পূর্বে উল্লিখিত ক্ষুদ্র বীজ দল কর্তৃক বিভিন্ন নাট্যসংগঠন ও নাটক সম্পর্কিত বিভিন্ন উৎস থেকে কর্মশালার মাধ্যমে নাট্যকর্মী নির্বাচন করা হয়। প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নাট্যকর্মীগণ একটি অস্থায়ী প্রযোজনা দলের অন্তর্ভুক্ত হয়। এই প্রযোজনা দল একটি নির্দিষ্ট প্রযোজনা নির্মাণ করে। নাট্যবিষয়ে নিয়মিত কর্মশালা পরিচালনা ছাড়াও ‘স্পর্ধা: ইন্ডিপেন্ডেন্ট থিয়েটার কালেক্টিভ' ইতোমধ্যে জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা (২০১৮), ৪.৪৮ মন্ত্রাস (২০২০) ও বিস্ময়কর সবকিছু (২০২১) প্রযোজনাত্রয় সার্থক রূপে মঞ্চায়ন করেছে। আমি বীরাঙ্গনা বলছি দলটির চতুর্থ প্রযোজনা ।
নীলিমা ইব্রাহিম কৃত আমি বীরাঙ্গনা বলছি | কাহিনি সারসংক্ষেপ
১৯৯৪ সালে প্রথম প্রকাশিত নীলিমা ইব্রাহিম কৃত আমি বীরাঙ্গনা বলছি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের এক নির্মম দলিল। এই দলিলে বিবৃত হয়েছে সমাজের ভিন্ন ভিন্ন পর্যায় থেকে উঠে আসা সাত জন বীরাঙ্গনা নারীর বয়ান। এসকল বীরাঙ্গনাদের কষ্ট যাত্রায় দর্জির মেয়ে আছেন, আছেন গ্রামের বিত্তশালী কৃষকের মেয়ে, আবার শহরের উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা থেকে রাজনীতিবিদের মেয়েও আছেন। ভিন্ন ভিন্ন পারিবারিক অবস্থা থেকে উঠে আসা এই সাত জনের মাঝে সবচেয়ে বড় মিল এই যে, জীবন যুদ্ধে তারা কেউই পরাজিত নন। তদুপরি এটা অনস্বীকার্য যে, বীরাঙ্গনাগণ নির্যাতিত ও শোষিত হয়েছেন বারংবার: মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি সেনা ও তাদের এদেশীয় দোসরদের হাতে এবং যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে অধিকাংশ বাঙ্গালির হাতে। উভয় ক্ষেত্রে নারী ব্যবহৃত হয়েছে: পাকিস্তানের যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে এবং বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদের দ্যোতক রূপে।
দীর্ঘ তিন মাস ব্যাপী মহড়া শেষে ‘স্পর্ধা: ইন্ডিপেন্ডেন্ট থিয়েটার কালেক্টিভ' আমি বীরাঙ্গনা বলছি নামে যে প্রযোজনা উপস্থাপন করছে, তার পাঠ, অল্প কিছু শব্দ ব্যতীত, সম্পূর্ণভাবে নীলিমা ইব্রাহিম কৃত দলিলে বিবৃত সাত জন বীরাঙ্গনার বয়ান হতে আহরণ করা। এই প্রয়াসে সহযোগী শক্তি হিসেবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পাশে দাঁড়াবার কারণে আমি বীরাঙ্গনা বলছি মঞ্চে আনয়ন অনেকটা সহজ হয়েছে।
আমি বীরাঙ্গনা বলছি | নির্দেশনা: সৈয়দ জামিল আহমেদ; ইদুল আযহা ২০২৩ এর সন্ধ্যার পরিবেশনায় আগত দর্শকবৃন্দের একাংশ |
অভিনয়
সংগীত পরিবেশন
কলা-কুশলী
- মূল বয়ান: নীলিমা ইব্রাহীম
- পরিকল্পনা ও নির্দেশনা: সৈয়দ জামিল আহমেদ
- ড্রামাটার্গ ও পোশাক পরিকল্পনা: মহসিনা আক্তার
- সহকারী নির্দেশনা ও সংগীত প্রক্ষেপণ: মো. সোহেল রানা
- পোস্টার ডিজাইন: সব্যসাচী হাজরা
- মঞ্চ ও আলোক পরিকল্পনা এবং সংগীত নির্বাচন: সৈয়দ জামিল আহমেদ
- পরিবেশিত গানে সুর সংযোগ: আরমীন মূসা
- সংগীত পরিবেশন সমন্বয়কারী: মৈনাক কানুনগো
- পোশাক পরিকল্পনা সহযোগী: সুস্মিতা খান
- মঞ্চ পরিকল্পনা সহযোগী: রাশেদ কবির সৌমিক
- মঞ্চ নির্মাণ: কাজী কালাম
- আলোক যন্ত্র বিন্যাস ও স্থাপন: মোহাম্মাদ বজলুর রহমান
- আলোক যন্ত্র বিন্যাস ও স্থাপন সহযোগী: মনির হোসান
- আলোক প্রক্ষেপণ: মো. সাইফুল ইসলাম মণ্ডল, মোঃ মোখলেছুর রহমান, এস. এম. বায়েজিদ হোসেন
- শব্দ-যন্ত্ৰ স্থাপন: মোঃ হোসেন
- চিত্রগ্রহণ: জান্নাতুল মাওয়া, রাশেদ কবির সৌমিক
- ফ্রন্ট-অফ-হাউজ ব্যবস্থাপনা: সুস্মিতা খান
- গ্রাফিক্স: সাফায়াত মিশু, সাদিয়া আক্তার
- ভিডিও চিত্র: সাদিয়া আফরিন অরণি
- প্রচার: স্পর্ধা: ইন্ডিপেন্ডেন্ট থিয়েটার কালেক্টিভ
- মিলনায়তন ব্যবস্থাপনা: তানভীর আহমেদ
- মিলনায়তন ব্যবস্থাপনা সহযোগী: মনিকা, ইমাম, রবি, সাইফুল, মুনায়যা, আয়েশা, কপোতাক্ষী
- প্রযোজনা অধিকর্তা: মো. সোহেল রানা